গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা কি ?
গুচ্ছ পরীক্ষায় একজন স্নাতক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী একটি সম্মিলিত (সাধারণ ও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়) ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ২২ টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে আবেদন করতে পারবে। এটি একদিকে ২২ টি আলাদা সময়ে দেশের আলাদা প্রান্তে পরীক্ষা দেয়ার আর্থিক, শারীরিক ও মানসিক ভোগান্তী থেকে মুক্তি দিচ্ছে, অপরদিকে শিক্ষার্থীদের একটি পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের সুযোগ দিচ্ছে। পূর্বে দেখা যেত, বিশ্ববিদ্যালয়ে কাছাকাছি সময়ে পরীক্ষার ফলে শিক্ষার্থীরা যেকোনো এক জায়গায় পরীক্ষা দিতে বাধ্য হতো। আবার পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ এলে তারা আগের বিশ্ববিদ্যালয়ের সিট বাতিল করে ভর্তি হয়। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি এবং শিক্ষাকার্যক্রম শুরু করা বেশ সময় সাপেক্ষ ব্যাপার ছিল। গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা এই সমস্যা নিরসনে কাজ করে আসছে। ২২ টি সাধারণ ও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে এই বছর ২০২২ সালের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
২০২০ সালে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবং বিশটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সিদ্ধান্তে মোট তিনটি ইউনিটে ভর্তিপরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ৮ এপ্রিলের সভায় পরীক্ষার সম্ভাব্য ৩, ১০ এবং ১৭ সেপ্টেম্বর নির্ধারিত হয়েছে। বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা এ ইউনিটে, মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীরা বি ইউনিটে এবং বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা সি ইউনিটে আবেদন করতে পারবে।
এই বছর নতুন দুইটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় যুক্ত হয়েছে। তাই এই বছর মোট ২২ টি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে সেপ্টেম্বরে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। মোট ২২ টি বিশ্ববিদ্যালয় হলো
- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
- ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া
- শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট
- খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা
- হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর
- মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, টাঙ্গাইল
- পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী
- নোয়াখালি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী
- কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা
- জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, ত্রিশাল, ময়মনসিংহ
- যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর
- বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর
- পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ, গাজীপুর
- শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জামালপুর
- শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়, নেত্রকোনা
- বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল
- রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি
- রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ, সিরাজগঞ্জ
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়, কিশোরগঞ্জ
- চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চাঁদপুর
এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষার্থীরা এ ইউনিটে আবেদন করতে পারবে। এক্ষেত্রে এসএসসি এবং এইচএসসি উভয় পরীক্ষায় ন্যূনতম ৩.৫০ জিপিএসহ মোট জিপিএ ৮.০০ হলে আবেদন করতে পারবে। মানবিক বিভাগের উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা এসএসসি এবং এইচএসসি উভয় পরীক্ষায় ন্যূনতম ৩.০০ জিপিএসহ মোট জিপিএ ৬.০০ থাকলে বি ইউনিটে আবেদন করতে পারবেন। বাণিজ্য বিভাগের উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের এসএসসি এবং এইচএসসি উভয় পরীক্ষায় ন্যূনতম ৩.০০ জিপিএসহ মোট জিপিএ ৬.৫০ থাকলে সি ইউনিটে আবেদন করতে পারবেন
প্রাথমিকভাবে ভর্তিপরীক্ষায় অংশগ্রহনে নির্বাচনের জন্য এইচএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের অনলাইনে আবেদন করতে হবে। সেখানে নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা চূড়ান্তভাবে নির্বাচনের জন্য ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে পারবে।
গতবছরে ইউজিসির সিদ্ধান্তনুযায়ী প্রত্যেক ইউনিটে মোট দেড় লক্ষ শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল।
প্রাথমিক আবেদনে নির্বাচিত শিক্ষার্থী পরবর্তীতে নির্দিষ্ট ফি প্রদানের পর ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। এমনকি শিক্ষার্থীরা তাদের নিকটবর্তী পরীক্ষা কেন্দ্র সিলেক্ট করতে পারবে। ভর্তি পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর দিয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির শর্তাবলীর সাথে মিল রেখে আবেদন করতে হবে। এক্ষেত্রে লক্ষণীয়, প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি রিকোয়ারমেন্টস সাধারণত ভিন্ন হয়ে থাকে। যেহেতু বিভাগ পরিবর্তনের জন্য আলাদা ভর্তি পরীক্ষা হয় না, তাই নম্বরের ভিত্তিতে পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিটগুলোতে আবেদন করতে হবে।
তবে সঙ্গীত, নৃত্য, নাট্যকলা, চারুকলা, আর্কিটেকচার বিভাগে ভর্তি জন্য আলাদা ব্যবহারিক বা লিখিত কিঙ্গা উভয় পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে হবে। যেমন- খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়,, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়। লিটারেচার ও রিলিজিয়ন স্টাডিজে আলাদা ব্যবহারিক কিংবা লিখিত পরীক্ষা না হলেও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ডি ইউনিটের থিওলজি এবং রিলিজিয়ন স্টাডিজে ভর্তির জন্য আলাদা মৌখিক ও লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে।
প্রতি ইউনিটে ১ ঘন্টায় ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষা হবে। প্রত্যেক ইউনিটে আবশ্যিক বাংলা এবং ইংরেজি পরীক্ষা দিতে হবে। এ ইউনিটে বাংলা-ইংরেজি ছাড়া পদার্থবিদ্যা এবং রসায়নের উপর পরীক্ষা হবে। ঐচ্ছিক গণিত, জীববিদ্যা এবঅং আইসিটি থেকে যেকোনো দুইটি বিষয়ের উত্তর দিতে হবে। বি ইউনিটে আইসিটি উত্তর দিতে হবে। সি ইউনিটে হিসাববিজ্ঞান, ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপঅনা েবং আইসিটির উপর আবশ্যিক উত্তর দিতে হবে। তবে এ ইউনিটের জন্য লক্ষণীয়, পছন্দের বিভাগ পেতে হলে কোন বিষয়ের উত্তর দিবে সেটা খেয়াল রাখতে হবে। সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য ২০২০ সালের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্পেকটাস ওয়েবসাইট থেকে দেখে নিতে পারো।
সারা বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে ইচ্ছুক পরীক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমাতে ২০২০ সাল থেকে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবারেও ২০২২ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা অংশ নিবে। সাথে দ্বিতীয়বার গুচ্ছ ভর্তিপরীক্ষায় আবেদনের সুযোগ থাকছে। ক্লাসবাস প্রথমবারের মতো শুধু গুচ্ছ ভর্তিপরীক্ষার জন্য নিয়ে এসেছে কোর্স। থাকবে আবশ্যিক এবং ঐচ্ছিক সকল বিষয়ে ঘরে বসে প্রস্তুতির সুযোগ। প্রত্যেক কোর্স মডিউল এমনভাবে সাজানো যাতে তুমি ঘরে বসে সহজেই নিজেকে পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য প্রস্তুত করতে পারো। ঝটপট দেখে নাও আমাদের কোর্স মডিউল!