Subject Review: অর্থনীতি
- Posted by Marzana Mahmud
- Categories Subject Review
- Date March 26, 2022
- Comments 2 comments

কেন অর্থনীতি পড়বো?
মানুষ জন্মসুত্রেই বিবেচক। এমনকি শিশুও চিৎকার করে কেঁদে নিজের ক্ষুধার কথা বুঝিয়ে দেয়। ঘুমিয়ে পরে বা হাত পা ছোড়াছুড়ি করে জানান দেয় তার ক্ষিধে মিটে গিয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে এই তথ্যের সাথে অর্থনীতি পড়ার সম্পর্ক কোথায়?
আগে যেমনটি বলছিলাম, মানুষ জন্মসূত্রেই বিবেচক। মানুষ তার প্রয়োজনীয়তা জানে। কিভাবে তার প্রয়োজন মেটানো যায় সেই পথ সবসময়ে খুঁজে। ধরুন, জনৈক আবদুল গণি গ্রামে এক টুকরো ছোট জমিতে বসতভিটা করেছেন। ঘরের পেছনে নলকূপ গেড়েছেন। সামনে করেছেন ছোট ফুলের বাগান আর বা দিকে লাউয়ের মাচা, তার নিচে চাষ করেছেন মরিচ, পুঁইশাক। বাজারে মুদি দোকান ভাড়া নিয়েছেন। একমাত্র মেয়েকে স্কুলে পড়াচ্ছেন। তার স্ত্রী জুলেখা সারাদিন ঘরের কাজ করে বিকেলে কাঁথা সেলাই করেন।
এখানে তাহলে অর্থনীতির সম্পর্ক কই? আপাত দৃষ্টিতে একটি পরিবারের গল্প মনে হলেও এর প্রতিটি ধাপে রয়েছে অর্থনীতি। ছোট লাউয়ের মাচা কিংবা পুঁইশাক চাষের গল্পের পেছনে রয়েছে বাজারে সবজির দাম বেড়ে গেলেও যাতে চারটা ভাত খেয়ে বাঁচার সুযোগ। জুলেখা বেগম সারাদিন ঘরের কাজ করছেন যাতে সংসারের বাড়তি খরচ কমে। দেশের লক্ষ্য থাকে যেন অসংখ্য আবদুল গণির দোকানের শেলফে বিক্রির পণ্য থাকে, প্রতিবেশীদের কেনার যেন সামর্থ্য থাকে। তাহলেই আবদুল গণির ঘরে বাতি জ্বলবে, তার মেয়ে শিক্ষিত হবে। তারা বিবেচক না হয়ে সুবিবেচক যদি হয়, তাহলে জুলেখা বেগমের তৈরী নকশী কাঁথা থাকবে ব্রিক লেনের বিছানায়। তারা জুলেখা বেগমের কল্পনা, কষ্ট ও পরিশ্রমের মূল্য দিয়েছেন। জুলেখা বেগমও বিক্রির উদ্দেশ্যে আরো দুইজনকে নিয়েছেন কাঁথা সেলাইয়ের কাজে।
অর্থনীতিও তাই। অসংখ্য আবদুল গণি ও জুলেখা বেগমকে নিয়ে একটি দেশ। তাদের চাহিদা আছে, যোগান চাই। কিন্তু সম্পদ সীমিত। বাজার এমনভাবে তৈরী করতে হবে যাতে সবাই তার প্রয়োজনীয় ভাগ পায়। এটা নিয়েই অর্থনীতি। কিন্তু এ কি! এই সবকিছুই তো জানি, তাহলে অর্থনীতি কেন পড়বো?
আমি যদি ক্রেতা ( ভোক্তা ) হই, তাহলে আমার সামনে রয়েছে বিক্রেতা। অর্থনীতি তোমাকে দেখাবে মুদ্রার আরেক পিঠ। কেন একজন কিশোর পড়ার টেবিল ছেড়ে কারখানার মেশিনের হাতল তুলে নেয় তার উত্তর দিবে। তার এই সিদ্ধান্তের জন্য সে কি কি সুযোগ হাতছাড়া করবে তা সেখাবে। অর্থনীতিতে একটি টার্ম খুব প্রচলিত, অপরচুনিটি কস্ট। আপাত দৃষ্টিতে স্কুলে এতো সময় ব্যয় না করে কিছু কামাই করছে মনে হলেও সে একটি নিরাপদ জীবন হারাচ্ছে। আবার লক্ষ লক্ষ গ্র্যাজুয়েট কেন বেকার, তার উত্তরও দিবে অর্থনীতি। আমরা মোটা মোটা বই না পড়েই প্রতিদিন অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নেই। তবে থিওরি, গাণিতিক যুক্তি গ্রাফ আপনাকে প্রত্যেকটি ঘটনার কারণের উত্তর দিবে। ঘূর্নিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামে ত্রান দেয়া যে মায়া নয়, পাশের বন উজাড় দায়ী। এই ত্রান দেয়াও যে অর্থনীতি বা বাজার দখলের মারপ্যাঁচ সেটাও জানা যাবে। এটা প্রমানের জন্য রয়েছে চমকপ্রদ থিওরি, গাণিতিক যুক্তি এবং গ্রাফ। অর্থনীতি পড়াবে কিভাবে সীমিত সম্পদ কিভাবে কার্যকরভাবে বিতরণ করা যায়, কিভাবে বাজার টিকিয়ে উন্নতি করতে হয়। অর্থনীতি মানে শুধু কারেন্সি নয়; শ্রম মেধা সময় জীবন সবকিছুর মূল্য আছে। সেটাই শিখাবে অর্থনীতি। তথ্য গোপন করে বা অন্যের ক্ষতি করে লাভবান হওয়া যে নিজেরই ক্ষতি সেটাও এখানে বিবেচ্য। এখানে রয়েছে কোনো ঘটনা বর্ণনায় নিজের সৃজনশীলতার সুযোগ।
যা যা পড়ানো হয়ঃ
Under Grade Level
- Microeconomics
- Macroeconomics
- English
- Mathematics
- Statistics
- Politics and Administration in Bangladesh
- Sociology
- Principles of Accounting
- Banking and Financial Institutions
- Public Finance
- Computing Applications
- Economics of Planning and Project Analysis
- Agricultural Economics
- Environmental and Energy Economics
- Economic History of Bangladesh
- History of Economic Thought
- Contemporary Issues of Bangladesh Economy
- International Trade
- International Finance
- Industrial Organization
- Research Methodology
Grade level
- Microeconomics
- Macroeconomics
- Econometrics
- International Economics
- Health Economics
- Monetary Economics
- Development Economics
- Labour Economics
- Contemporary Issues in Bangladesh
(based on SUST)
অর্থনীতি থেকে গ্র্যাজুয়েশন শেষে কাজ করার সুযোগ বহুমুখী। যেহেতু এটি একটি পিওর সাবজেক্ট যার টেকনিকাল দিক অনেক বৃহত্তর, তাই সকল প্রতিষ্ঠানেই কাজ করার সুযোগ রয়েছে। সেটা হোক কোনো ব্যাংক, হাসপাতাল বা ফার্ম। তবে গবেষনার সুযোগ অনেক। বর্তমানে অনেক রিসার্চ বেসড অর্গানাইজেশন গড়ে উঠেছে যেমন সানেম, সিপিডি, এটুআই ইত্যাদি। এছাড়া কেন্দ্রীয়, সরকারী, বেসরকারী ব্যাংকে প্রজেক্ট ম্যানেজের জন্য আলাদা পজিশন রয়েছে যেখানে অর্থনীতি গ্র্যাজুয়েটদের প্রাধান্য দেয়া হয়।
কেউ শিক্ষকতা করতে চাইলে তারও সুযোগ রয়েছে। চাইলে স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক হিসেবে যোগদান করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে আপনার মোটামুটি ভালো অ্যাকাডেমিক পারফর্মেন্স ও আন্ডারস্ট্যান্ডিং জরুরী। তাছাড়া উচ্চশিক্ষা নিতে বাইরে মাস্টার্স বা পিএইচডির সুযোগ পাবেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে GRE, TOEFL, IELTS এক্সাম দিতে হবে আপনার পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ের রিকোয়ার্মেন্টস অনুযায়ী। তবে মাস্টার্স বা পিএইচডি কোর্সে ফুল স্কলারশীপ বা ওয়েভারের সুযোগ রয়েছে।
তবে আপনি চাইলে নিজের শেকড়েও ফিরে যেতে পারেন উচ্চশিক্ষা শেষে। সেখানে যে চাষাভুষা আমাদের দেশকে টিকিয়ে রেখেছে তাকে সহায়তা করতে পারেন আরো ভালোভাবে। আপনার চার-ছয় বছরের জ্ঞানে তাদেরকেও অর্থনৈতিকভাবে সচেতন করে গড়ে তুলতে পারবেন!
লেখাঃ মারজানা মাহমুদ ,
শিক্ষার্থী ,অর্থনীতি বিভাগ , শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ।
You may also like

2 Comments
অনেকদিন পর এমন গঠনমূলক লেখা পড়ে তৃপ্তি পেলাম|
অনেক দিন পর এমন গঠনমূলক লেখা পড়ে তৃপ্তি পেলাম|